মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
- নীলফামারীর ডিমলায় আটঘড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী স্বপনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অধিকাংশ সময় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন না । মাঝেমধ্যে আসলেও তারাতারি চলে যান, ক্লাস নেন না। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ছয় জন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা কাগজে কলমে ১৪০ জন। তবে
বছরের এক মাস পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনও ক্লাস রুটিন করা হয়নি। ফলে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা।
দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরের বারান্দার চালা ভেঙে গেছে।স্যাত স্যাতে কক্ষগুলোতে চার-পাঁচটি করে বেঞ্চ। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কেউ নেই, পঞ্চম শ্রেণির ৫/৭ জন শিক্ষার্থী মাঠে খেলছে। বিদ্যালয়ের মাঠে বসে আছেন দুইজন সহকারী শিক্ষক।
সহকারী শিক্ষক কাদেরী সাবরিন দৈনিক দেশ জগত পত্রিকা কে জানান, একজন সহকারী শিক্ষক ছুটি নিয়েছে। প্রধান শিক্ষকসহ বাকি দুই শিক্ষক স্কুলে আসে নি।
শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক স্বপন ওইদিন কোনো ছুটি নেয়নি।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি তহমিনার রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি না থাকার সুযোগে প্রধান শিক্ষক স্কুল সংস্কার, শিক্ষা উপকরণ ক্রয়সহ সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। তার স্বেচ্ছাচারি আচরণের কারণে অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে তাদের সন্তানদের অন্য স্কুলে ভর্তি করা ন।
প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন ঝুলে আছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজাফফর হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্কুলে না এসেই মাস শেষে বেতন নেন । তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বরাবর এলাকাবাসী অভিযোগ করলেও লাভ হয়না। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিকের তেমন কার্যক্রম নেই। নিয়মিত পাঠদান করা হয় না। এ অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার সময় দায়িত্বে কেউ থাকেন না। এদিকে তার অনুপস্থিতিতে স্কুলে পাঠদান প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক স্বপন বলেন, আমি এ বিষয়ে কথা বলবো না। আমার স্কুল নিয়ে আপনাদের এতো মাথাব্যথা কেন?
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির এডহক কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয়ে দুই দিন পরিদর্শন করেছি। এরমধ্যে একদিন ও তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। তাকে ডেকে আনা হয়েছে।
নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত অনেক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply