মোহাম্মদ আলী সানু নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
পোল্ট্রি বর্জ্যের ফলপ্রসূ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বায়োগ্যাসের বদলে জৈব সার তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছে প্যারাগণ এগ্রো লিমিটেড। বাংলাদেশে ডিম উৎপাদনের বড় খামারগুলোর সমস্যা হলো সেগুলো প্রচুর পরিমাণে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য তৈরি করে। নির্দিষ্ট মৌসুমে কৃষকরা এসব বর্জ্য কিনে নেয়। আর বাকি পুরো বছর তা জমে স্তূপ হতে থাকে। আশেপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের কাছ থেকে আসতে থাকে দুর্গন্ধ আর মশামাছির উপদ্রবের অভিযোগ। এই সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায় বেছে নিতে গিয়ে প্যারাগণ এগ্রো লিমিটেড এসব বর্জ্যকে জৈব সারে পরিণত করছে।
বর্তমানে জৈব সারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং পোল্ট্রি বর্জ্যের সুব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটি পোল্ট্রি বর্জ্য থেকে জৈব সার উৎপাদনে পদক্ষেপ নিয়েছে।
কৃষিভিত্তিক দেশ বাংলাদেশ। মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮০ শতাংশ এই খাত থেকে জীবিকা আহরণ করে। এসব মানুষ সস্তা রাসায়নিক সার ব্যবহারে অভ্যস্ত। প্যারাগণ এগ্রো লিমিটেড এর অফিসার সাব্বির হোসেন বলেন, রাসায়নিক সারের নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার মাটির উর্বর শক্তি কমায়।
জমি সেচে প্রচুর অর্থ ব্যয় হওয়ার কারণে শস্যচাষীদের মধ্যে এখন জৈব সার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জৈব সারের মধ্যে থাকা জৈব উপাদান মাটিতে স্পঞ্জের মতো পানি ধরে রাখে, ফলে সেচের প্রয়োজন কমায়। খাবারে রাসায়নিকের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত হয়ে এখন অনেকেই জৈব সারে উৎপাদিত খাবার কেনায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এসব বিষয় বিবেচনায় পোল্ট্রি বর্জ্যকে কম্পোস্টের মাধ্যমে জৈব সারে পরিণত করার দিকে ঝুঁকছে। এই সার এরইমধ্যে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে কম্পোস্ট বা জৈব সার তৈরিতে পোল্ট্রি বর্জ্য ব্যবহার অনেক বেশি সাশ্রয়ী। কম্পোস্টিংয়ের মাধ্যমে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্যকে গন্ধহীন পণ্যে পরিণত করা যায় যা সহজে বিক্রিও করা যায়।
চারপাশের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে প্যারাগন এগ্রো লিমিটেডের ডিমলা কারখানায় পরীক্ষামূলক সার উৎপাদন এরই মধ্যে সাফল্যের মূখ দেখতে শুরু করেছে। স্থানীয় কৃষক তৈলদ্দীন, আনোয়ার হোসেন, আঃ মজিদ মিয়া বলেন, পরীক্ষা মূলক আমরা এ সার ব্যবহার করে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
কৃষিবিদের মতে
পোল্ট্রি বর্জ্য থেকে কমপোস্ট তৈরি ভালো উদ্যোগ। এর সুবিধা দুটি। জৈব সারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এর মাধ্যমে বর্জ্যের আরও ভালো ব্যবস্থাপনা সম্ভব হয়।
এটা পরিবেশবান্ধব এবং খরচ সাশ্রয়ী,’ বলেন ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা হলো তা মাটিকে উর্বর রাখে এবং রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া গুণাগুণ মাটিতে ফিরিয়ে আনে। অন্যদিকে এই সার শস্যকে প্রাকৃতিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টি সরবরাহ করে।
Leave a Reply