1. tistanewsbd2017@gmail.com : Tista24 :
May 10, 2024, 6:17 am

উলিপুরে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে চরাঞ্চলের পাটক্ষেত, চিন্তিত চাষিরা 

Reporter Name
  • Update Time : Sunday, April 28, 2024
  • 5 Time View

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রচণ্ড খড়া, তীব্র তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ছে তিস্তার চরাঞ্চলের শত শত বিঘা জমির পাটক্ষেত। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপজেলার তাপমাত্রা ৩৭.৭ থেকে ৩৮.০৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে। জৈষ্ঠের কাঠফাটা রোদ ও অনাবৃষ্টিতে পাটের ক্ষেত শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানি এবং  সেচ দিতে না পারায় পাট গাছের সঠিক বৃদ্ধি হচ্ছে না ও পাট গাছ মরে যাচ্ছে। ফলে চলতি মৌসুমে চাষকৃত পাট নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকেরা।
জানা যায়, উপজেলার বজরা, গুনাইগাছ, থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়ন তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত।
কৃষকেরা জানান, গত বছর তিস্তা নদীতে দ্বিতীয় দফা বন্যায় ভারত থেকে পানির সঙ্গে কাদাপানি আসার ফলে তিস্তা নদীর বালু মাটিতে পলি জমেছে। ফলে এসব জমিতে বিভিন্ন ধরনের আবাদ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন চরাঞ্চলের চাষিরা।
গোড়াই পিয়ার, রামনিয়াশা, হোকডাঙ্গা, টিটমা, নাগড়াকুড়া, দড়িকিশোরপুর, মধ্য গোড়াই, কদমতলা, অজুর্ন, বিরহিম, সন্তোষ অভিরাম, সাদুয়া দামারহাট, কর্পূরা, খারিজা লাটশালা সহ অসংখ্য চরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রচণ্ড খড়ায় জমির মাটি ফেটে যাচ্ছে। পাটগাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। তপ্ত রোদ থেকে সোনালী আঁশ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে জমিতে সেচ দিচ্ছেন কৃষক। সেচ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেননা চরাঞ্চলের চাষিরা। কেউ পাটক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছেন, আবার কেউ সেচ দেওয়ার পরে জমিতে সার দিচ্ছেন। চরাঞ্চলের জমি গুলোতে কিছু কিছু পাট গাছ দেখা গেলেও বেশির ভাগ জমিতে নেই পাট গাছ। চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এসব চাষিরা। তারা জানান, অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে পাটক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। সেচ দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছেনা পাটক্ষেত।
তিস্তার চরাঞ্চলের চর গোড়াইপিয়ার এলাকার পাট চাষি শাহাবুদ্দিন মিয়া জানান, প্রচন্ড গরমে  জমিতে সেচ দেওয়ার পরেও পাটের ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। মাটিতে কোনো রস থাকছে না। সেচ দিতে খরচও বাড়ছে, আবার মাটি ভিজা থাকছে না। একই জমিতে দু’বার পাট চাষ করেও পাট ক্ষেত টিকিয়ে রাখতে পারিনি। দু’বার পাট চাষ করে খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। ঋন করে পাট চাষ করেছি এখন ঋন শোধ করবো কিভাবে চিন্তায় পড়েছি। পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে সংসারের খরচ চালাবো। তিস্তার চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার পাট চাষিদের মধ্যে রবিয়াল ইসলাম, বকুল মিয়া, চাঁদ মিয়া, রফিকুল ইসলাম, এমদাদুল হক, মোহাম্মদ আলী, আশরাফুল হক, আনারুল ইসলাম ও আব্দুল গনি সহ আরও অনেকে বলেন, তিস্তার চরে জমিতে পাট লাগিয়েছি। প্রথমেই বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পচন্ড গরমে পাট গাছ উঠেনি। পরে আবারো জমি চাষ করে পাট লাগিয়েছি। এবার পাট গাছ উঠলেও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট বাড়ছে না এবং প্রচন্ড তাপদাহে পাট গাছ মরে যাচ্ছে। প্রতিদিন পাটক্ষেতে অনেক টাকা খরচ করে সেচ দিয়ে পানি দেয়ার পরও পাট টিকিয়ে রাখতে পারিনি। আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তা আর দুর্ভোগে চরাঞ্চলের কৃষকরা। শুধু পাট আবাদ নয়, বিভিন্ন জাতের সবজি চাষে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, বর্তমান উপজেলায় তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এখন যে কোন ফসলি জমিতে প্রচুর পরিমাণ সেচ প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া তিস্তার চরাঞ্চলের জমি গুলো বালু দ্বারা বেষ্টিত। সেচের পানি প্রয়োগ করলে সাথে সাথে শুকিয়ে যায়। ফলে পাট ক্ষেতের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এজন্য চরাঞ্চলে যে কোন ফসলি জমিতে প্রচুর পরিমাণ সেচ প্রয়োগ করতে হবে বলে জানান তিনি।
এ দিকে জেলার রাজারহাট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিল মাসের শেষের দিকে তাপত্রামা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। কুড়িগ্রাম জেলায় ৩৮.০৪ থেকে ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে। এ মাসে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। এদিকে এপ্রিল মাস জুড়ে উত্তপ্ত আবহাওয়ার কারনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Jaldhaka IT Park
Theme Customized By LiveTV