1. tistanewsbd2017@gmail.com : Tista24 :
April 29, 2024, 11:58 am

কুড়িগ্রাম খাদ্য বিভাগে বস্তা ক্রয়ে দুর্নীতি ।।  ৭ কর্মকর্তা প্রত্যাহার 

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, October 27, 2020
  • 579 Time View
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য বিভাগের ৩ জন গুদাম কর্মকর্তা ও ৪ জন ইন্সপেক্টরকে দুর্নীতি, অনিয়ম,শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে একযোগে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত প্রশাসনিক কারণে প্রত্যাহারের  মঙ্গলবার কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য বিভাগে পৌঁছালে সংশ্লিষ্ট বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়। সম্প্রতি বস্তা সরবরাহকারী একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজশ করে পুরাতন ব্যবহার করা ছেঁড়া-ফাটা প্রায় ৮ লাখ বস্তা গ্রহণ করে নতুন বস্তা হিসেবে প্রত্যয়ন পত্র  দিয়ে দুর্নীতি করায় গুদাম কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়। প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তারা হচ্ছেন, কুড়িগ্রাম সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কানিজ ফতেমা, ভুরুঙ্গামারী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা প্রণব কুমার গোস্বামী, ফুলবাড়ী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর মাইদুল ইসলাম মাহি, ইন্সপেক্টর গোলাম মোস্তফা, ইন্সপেক্টর মনোয়ারুল ইসলাম রঞ্জু ও রবিউল অালম কাজল। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে খাদ্য বিভাগ উচ্চ পর্যায় থেকে কুড়িগ্রামের জন্য প্রায় আট লাখ নতুন বস্তা  ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিলে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে খাদ্য বিভাগের চুক্তি হয়। ওই প্রতিষ্ঠান বস্তা সরবরাহের সময় চুক্তি ভঙ্গ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে আট লাখ পুরনো নিম্নমানের ও ছেঁড়া-ফাটা বস্তা কুড়িগ্রাম জেলার কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারী খাদ্যগুদামে সরবরাহ করে। ওই সময় রংপুর ও নীলফামারীতে বস্তার সংকট দেখা দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কুড়িগ্রাম সদর খাদ্য গুদাম থেকে সদ্য ক্রয় কৃত ২ লাখ বস্তা সেখানে পাঠানো হয়। ওই বস্তা রংপুরে পাঠানোর পর পুরাতন বস্তা রিসিভ করে নতুন বস্তার প্রত্যয়ন পত্র প্রদানের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ফাঁস হয়। 
অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট গুদাম কর্মকর্তারা ওই সব পুরাতন ছেঁড়াফাটা বস্তা গ্রহণের সময়  নতুন হিসেবে প্রত্যয়ন পত্র দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বস্তাপ্রতি ১৬ টাকা থেকে ২০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে রিসিভ করেন। এতে মাঠ পর্যায়ের এসব কর্মকর্তারা মোট ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য করে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে গত ৮ সেপ্টেম্বর রংপুর ও নীলফামারী জেলা খাদ্য বিভাগে দুই লাখ (৩০ কেজি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন) বস্তা পাঠানো হয়। ওইসব বস্তার অধিকাংশই পুরনো ও ফাটা ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় সংশ্লিষ্ট খাদ্যগুদাম কর্মকর্তারা তা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপরই  বস্তা দুর্নীতির ঘটনা ধরা পড়ে । সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেন, সম্প্রতি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নতুন বস্তার পরিবর্তে ছেড়া-ফাঁটা ও নিম্নমানের প্রায় আট লাখ বস্তা কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন খাদ্যগুদামে সরবরাহ করেন। নীলফামারী সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শাহেদুর রহমান কুড়িগ্রাম সদর খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো বস্তাগুলো একেবারেই নিম্নমানের এবং ছেঁড়াফাটা হওয়ায় বিষয়টি তিনি লিখিত ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানোর স্বীকার করে আরো বলেন, পরিত্যক্ত এসব বস্তা ২০১৫-১৬ সালে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের বিভিন্ন খাতে ব্যবহৃত হয়েছিল, সে সব বস্তা ক্যালেন্ডার করে নতুন হিসেবে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। 
 এছাড়াও রংপুরের শঠিবাড়ী ও কাউনিয়া সরকারী খাদ্য গুদাম থেকেও বস্তা ছেঁড়াফাটা হওয়ায় কুড়িগ্রাম সদর খাদ্য গুদামে ফেরত পাঠানো হয়। কুড়িগ্রাম সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। ফুলবাড়ী সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমানের সাথে একযোগে ৭ কর্মকর্তা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ঠিক কি কারণে তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Jaldhaka IT Park
Theme Customized By LiveTV